শিরোনাম

বলিউড হারিয়ে যাওয়া অভিনেত্রীরা


পারভিন ববি, মমতা কুলকার্নি, মন্দাকিনী , মীনাক্ষী শেষাদ্রী , ভাগ্যশ্রী এদের কথা মনে আছে? বলিউডের আকাশে দাপিয়ে বেড়ানো এই সব মুখ গুলি কোথায় সেখবর আজ আর সে খবর কেউ রাখে না। চাকচিক্যে ভরা বলিউডের মায়াবী জগতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু অনেক তারকাই যথেষ্ট চাহিদা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বলিউড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে আড়ালে বসবাস করছেন। কেউ কেউ আবার হারিয়ে গেছেন বলিউডই ঐশ্বর্যের পাঁকে। সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে সেই হারিয়ে যাওয়া মুখ গুলিরই খোঁজ করার চেষ্টা করেছে।


পারভিন ববি

পারভিন ববিঃ ১৯৭২ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত বলিউডে একপ্রকার দাপিয়ে বেরিয়েছেন পারভিন ববি। মজবুর, নামক হালাল, কালা পাত্থার প্রভৃতি সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য প্রশংসা ও পান তিনি। বড় বড় অভিনেতাদের সাথে অভিনয়ের অবিজ্ঞতা আছে ঝুলিতে। সাহসী পোশাকের ব্যাবহার করে তৎকালীন হিন্দি সিনেমাতে নতুন স্টাইলের শুরু করেন। হটাত করে জরিয়ে পরেন মহেশ ভট্টের সাথে গোপন সম্পর্কের বিতর্কে। মাদকে আসক্তির ফলে ভুগতেও হয় তাকে। তারপর ধীরে ধীরে লক চক্ষুর আড়ালে ছলে জান পারভিন। অবশেষে নাভি মুম্বাইয়ের ফ্লাটে২২জানুয়ারি, ২০০৫-এ মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় পারভিনকে।

মীনাক্ষী শেষাদ্রী

মীনাক্ষী শেষাদ্রীঃ মাত্র ১৭ বছর বয়সে মিস ইন্ডিয়া খেতাব জয় করেছিলেন মীনাক্ষী শেষাদ্রী। পরে বলিউডে নিরঙ্কুশ সাফল্য পান তিনি। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে শাহেনশা এবং জ্যাকি শ্রফের সঙ্গে হিরোর মতো ছবিতে দেখা গেছে মীনাক্ষীকে। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় মীনাক্ষী অভিনীত সর্বশেষ ছবি ঘাতক। এরপর বলিউডের আর কোনো ছবিতে দেখা যায়নি গুণী এই অভিনেত্রীকে।


মমতা কুলকার্নি

মমতা কুলকার্নিঃ নব্বইয়ের দশকের সাড়া জাগানো বলিউডের অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া আশিক আওয়ারা ছবিতে সাইফ আলী খানের সঙ্গে অভিনয় করে ফিল্মফেয়ার লাক্স অ্যাওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার পুরস্কার ঝুলিতে ভরেন মমতা। বলিউডে ১১ বছরের অভিনয়জীবনে তিনি বেশ কয়েকটি ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন। সালমান খান, আমির খান, শাহরুখ খানের মতো প্রভাবশালী অভিনেতাদের সঙ্গেও অভিনয় করেন তিনি। দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার পর গত বছরের মে মাসে খবরের শিরোনামে আসেন মমতা কুলকার্নি। প্রকাশিত খবরে বলা হয়, দুবাইতে যাবজ্জীবন কারা দণ্ডপ্রাপ্ত মাদক ব্যবসায়ী ভিকি গোস্বামীকে মুক্ত করতে ২০১২ সালের নভেম্বরে তাঁর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন মমতা। বিপুল পরিমাণ মাদক পাচারের সময় দুবাইতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ভিকি। ১৯৯৭ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে।২০১২ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামি রীতি অনুযায়ী মমতাকে বিয়ে করেন ভিকি। এর পরপরই তিনি মুক্তি পান। তাঁকে মুক্তি দেওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ভিকি বদলে গেছেন এবং ভালো মানুষে রূপান্তরিত হয়েছেন।
এদিকে গত বছর মমতা জানান, দীর্ঘ এক যুগ ধরে ঈশ্বরের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি। অটোবায়োগ্রাফি অব অ্যান যোগিনী শিরোনামে আধ্যাত্মিক একটি বইও লিখেছেন ৪২ বছর বয়সী মমতা।ভিকির মতো মমতাও ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি স্বামীর সঙ্গে কেনিয়ার নাইরোবিতে বসবাস করছেন।


মন্দাকিনী

মন্দাকিনীঃ হালকা রঙের সুন্দর চোখের মায়াবিনী অভিনেত্রী মন্দাকিনী। ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া রাম তেরি গঙ্গা মাইলি ছবিতে অভিনয় করে ব্যাপক হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। বলিউডের প্রথম সারির একাধিক অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করেছেন মন্দাকিনী। কিন্তু বলিউডে সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারেননি তিনি। আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে তাঁর সখ্যকেই বলিউডে মন্দাকিনীর ক্যারিয়ারের ভরাডুবির কারণ হিসেবে ধরা হয়।

কিমি কাতকার

কিমি কাতকারঃ  ৮০ দশকের শেষ দিক থেকে ৯০ দশকের শুরুর সময় পর্যন্ত পর্দা কাঁপিয়েছেন টারজান ছবির অভিনেত্রী কিমি কাতকার। বলিউডের বাঘা বাঘা অভিনেতার বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। বলিউড শাহেনশাঅমিতাভ বচ্চনের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন তিনি। আলোকচিত্রী ও বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাতা শান্তনু শোরেকে বিয়ের পর বলিউড ছেড়ে দেন কিমি কাতকার।

অনু আগারওয়াল

অনু আগারওয়ালঃ আশিকি ছবির ব্যাপক সাফল্যের রেশ ধরে রাতারাতি তারকা বনে যান অনু আগারওয়াল। প্রথম ছবির সাফল্যের পর আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করলেও ফ্লপ অভিনেত্রীর তালিকায় নাম লেখান তিনি। ১৯৯৯ সালে মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তাঁকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ দিন কোমায় থাকার পর সেরে উঠলেও তাঁর শরীরের অর্ধেক অংশ প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়। তিনি বর্তমানে বিহারে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন। বিহার স্কুল অব যোগায় যোগব্যায়াম চর্চা করেন অনু।


ভাগ্যশ্রী


ভাগ্যশ্রীঃ ম্যায়নে পেয়ার কিয়া সিনেমাতে সালমান খানের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে ভাগ্যশ্রীর সফল বলিউড অভিষেক হয়। কিন্তু পরবর্তী কয়েকটি ছবিতে তাঁর প্রতি ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন হননি। তাঁর অভিনীত একের পর এক ছবি ফ্লপ হয়। আর এভাবেই বলিউড থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যান ভাগ্যশ্রী। বর্তমানে লাইফ ওকে চ্যানেলে লট আও ত্রিশানামে এই সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে ভাগ্যশ্রীকে।

আয়শা জুলকা


আয়শা জুলকাঃ জো জিতা ওহি সিকান্দার ছবিতে আমির খানের বিপরীতে, খিলাড়ি ছবিতে অক্ষয় কুমারের নায়িকা ছিলেন হিসেবে অভিনয় করেছেন আয়শা জুলকা।। বলিউডে শক্ত একটি আসনই গড়েছিলেন আয়শা। কিন্তু ধনাঢ্য আবাসন ব্যবসায়ী সমীর বাসিকে বিয়ের পর বলিউড ছেড়ে দেন জনপ্রিয় এই তারকা অভিনেত্রী।

সোনম


সোনমঃ রাজীব রায় পরিচালিত ত্রিদেব ছবিতে অভিনয় করে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সোনম। পরবর্তী সময়ে বলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজীব রায়কে বিয়ে করেন সোনম। আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে চাঁদাবাজির হুমকি পাওয়ায় ভারত ছেড়ে চলে যান একসময়ের এই জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রী।

গ্রেসি সিং


গ্রেসি সিংঃ  মিস্টার পারফেকশনিস্টতারকা আমির খানের সঙ্গে লগান ছবিতে অভিনয় করে বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়ান গ্রেসি সিং। গঙ্গাজল ছবিতে অজয় দেবগন এবং মুন্নাভাই এমবিবিএস ছবিতে সঞ্জয় দত্তের মতো প্রভাবশালী অভিনেতার বিপরীতে অভিনয় করেন গ্রেসি। শুরুটা ভালো হলেও তাঁর অভিনীত একাধিক ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিতে না পারায় গ্রেসির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়তে থাকে এবং হারিয়ে যান তিনি।



0 comments: