ছবি- গুগল
|
পণ্ডিত ভীমসেনের
পুরো নাম ভীমসেন গুরুরাজ জোশী। জন্ম কর্নাটকের ধারওয়ার জেলার গডগ গ্রামে, ১৯২২ সালের ৪
ফেব্রুয়ারি আজকের দিনে। ভীমসেন জোশীর পিতা গুরুরাজ সেই আমলে একজন এমএ
পাস করা মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে যাঁর কয়েকটি বই ও আছে । তাঁর
পিতামহ ভীমাচার্য ছিলেন প্রসিদ্ধ কীর্তনকার। সব মিলিয়ে তাঁর পারিবারিক পরিবেশ ছিল
সঙ্গীত শিক্ষার অনুকূলে।
চানাপ্পা
কুর্তাকোর্তি নামের এক কীর্তনকারের কাছে পাঁচ টাকা দক্ষিণার বিনিময়ে সঙ্গীত শিক্ষা
শুরু করেন ভীমসেন। জাতে ধোপা হলেও চানাপ্পা ছিলেন মানসিকতায় একজন শিল্পী। তাঁর
কাছে মাত্র সাত মাসের তালিমের ভীমসেন তালিম নেন পণ্ডিত শ্যামাচার্যের কাছে।
সঙ্গীতের টানেই
মাত্র ১১ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ভীমসেন। শার্ট,হাফপ্যান্ট ও
শূন্য পকেটকে সম্বল করে এখানে-ওখানে ঘুরে মুম্বাই থেকে গেলেন গোয়ালিয়র। প্রসিদ্ধ
সরোদিয়া হাফেজ আলী খান তখন মাতিয়ে রেখেছেন গোয়ালিয়রের মহারাজের দরবার। ভীমসেন
সরোদিয়া হাফেজ আলী খানের কাছে এসে হাজির হন। হাফেজ আলীর বদান্যতা জীবনে ভুলতে
পারেননি ভীমসেন।
ভিমসেন জোশী
থেমে থাকেননি এক জায়গায়। সুরের সন্ধানে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন স্থানে, শিখেছেন বহু
গুণী শিল্পীর কাছে। তিনি যাঁদের কাছে শিখেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজাভাইয়া
পুছোয়ালে, কৃষ্ণরাওশঙ্কর
পণ্ডিত, কেশব
মুকুন্দ লুখে, বাঙালী শিল্পী ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের এবং সোয়াই গন্ধর্ভ।
মাত্র ১৯ বছর
বয়সে ভীমসেন জোশী প্রথম মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন এবং ২২ বছর বয়সে তাঁর প্রথম
রেকর্ড প্রকাশিত হয়। পঞ্চাশের দশকের গোড়ায় ভীমসেন জোশী খেয়ালের প্রচলিত ধারায়
এনেছেন নতুনত্ব। এক অদ্ভুত নাটকিয়তা দিয়ে শুরু হয় তাঁর গান যা শ্রোতার মনকে আবিষ্ট
করে রাখে। তাঁর কন্ঠে পাওয়া যায় বিভিন্ন ঘরানার সংমিশ্রনে সৃষ্ট নতুন এক সুর।
কিরানা ঘরানার বিলম্বিত আলাপ যেমন রয়েছে তাঁর কন্ঠে তেমনি রয়েছে আগ্রার লয়কারি।
তানের মধ্যেও তিনি এনেছেন নানা বৈচিত্র্য। পদ্মশ্রী, সেরা কণ্ঠের জন্য ন্যাশনাল ফিল্ম
অ্যাওয়ার্ড, প্রথম প্ল্যাটিনাম ডিস্ক, পদ্মবিভূষণ, কর্নাটকরত্ন, ভারতরত্নসহ বহু
সম্মান পেয়েছেন জীবনে।
No comments:
Post a Comment