ছবি- গুগল
|
শরীরের নাম মহাশয় যাহা সহাবে
তাহাই সয়। এই কথাটা ঠিক কত কাত খানি কার্যকরী এখন কার সময়ে? কাজের পরিধি আর জীবন ধারা বদলে যাওয়ার জন্য মানুষের
বিশ্রামের সময়ের ও অনেক হেরফের ঘটেছে। কাজ সব থেকে যে জায়গাতে তার কামড় বসিয়েছে তা
হল আমাদের ঘুমের সময়ের।
বিবিসি জানাচ্ছে, যুক্তরাজ্যের স্লিপ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকরা দেখেছেন,
রাত জেগে কাজের যে কুফল তা গভীরতর আণবিক স্তরে পরিলক্ষিত হয়। রাত
জাগার ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহতম বলে মনে হয়েছে তাদের। রাতের বেলায় কাজের সঙ্গে জড়িত
থাকা ব্যক্তিদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের
ঝুঁকির সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। রাতের ঘুম কখনো দিনে ঘুমিয়ে পূরণ করা সম্ভব
নয়।
গবেষকরা আরও জানান, মানুষের শরীরে একটি দেহ ঘড়ি রয়েছে, যার ছন্দ হচ্ছে রাতে ঘুম আর দিনে কাজ। একটি বাড়িতে যদি সব ঘরে ঘড়ি থাকে
এবং সব ঘড়িতে উল্টা-পাল্টা সময় দেখায় তবে ঘরের অবস্থা যা হতে পারে, এক্ষেত্রে রাত জাগার ফলে দেহ ঘড়ির অবস্থাও সেরকম। রাতে জাগার ফলে হরমোন
পরিবর্তন, দেহের তাপমাত্রায় রদবদল, মেজাজ ও মস্তিষ্কে ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধ
প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’ সাময়িকীতে।
রাত জাগা ২২ ব্যক্তিকে নিয়ে তারা গবেষণা করে শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো খেয়াল
করেন।
সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক
সিমন আর্চার জানিয়েছেন, মানুষের
জিনের ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে রাত জাগার ফলে পরিবর্তন দেখা দেয়। অনিয়মিতভাবে রাত জেগে
কাজ করার ফলে দেহ ঘড়ির ছন্দ রক্ষাকারী জিন ৯৭ শতাংশ কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুস্থ থাকতে হলে প্রতিটি মানুষেরই পর্যাপ্ত ঘুম
প্রয়োজন। টিভি দেখে বা কম্পিউটারে কাজ করে ঘুমাতে চাইলে তার মস্তিষ্ক উত্তেজিত
থাকে। ফলে ভালো ঘুম না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এতে করে ক্ষুধামান্দ্য, বিষণ্নতা, স্নায়ুবৈকল্য,
কোষ্ঠকাঠিন্য নানা সমস্যায় ভুগতে পারে। রাত জাগা ব্যক্তির অনেকেই
ঘন ঘন চা-কফি পান করে, এটিও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে রাত
জাগার ‘বদ অভ্যাস’ পরিহার করতে হবে। কারও যদি ৫টায় ঘুমানোর অভ্যাস থাকে,
তিনি কিন্তু চাইলেই পরদিন ১২টায় ঘুমাতে পারবেন না। ধীরে ধীরে
অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। রাত জাগা কমিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে সময়মত ঘুমানোর অভ্যাস
করতে হবে। নিয়মিত ঘুম হলে স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে। রাত জাগার দিন প্রচুর জল পান
করুন।
0 comments: