এপ্রিল, ২০১৪তে স্বপরিবারে গেছিলাম নেপাল। একদিন ভোরবেলায়,
পশুপতিনাথ মন্দিরে পূজা দিয়ে ক্যামেরা সমেত সোজা হাজির হয়ে
গেলাম বৌধ্যানাথ মন্দির চত্বরে। মন্দিরটির সৌন্দর্য আমায় মুগ্ধ করেছিল। ফটোগুলি
দেখার আগে মন্দিরটি সম্পর্কে ছোট করে একটু বলি।
রঙিন “প্রেয়ার ফ্ল্যাগের” মাঝে বৌধনাথের অনিন্দ্যসুন্দর চোখ জোড়া |
কাঠমান্ডুর থেকে প্রায় ১১ কিমি দূরে অবস্থিত এই সর্বজ্ঞানের দেবতা বৌধনাথের
মন্দির। ধবধবে সাদা গোলাকার সুবিশাল স্তূপ। বৌধনাথ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্তূপ এবং
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সম্মান প্রাপ্ত।
বৌধনাথ মন্দিরে ভগবান বুদ্ধের চোখ, যা মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ, সেটা নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক সেবায়েত, বৌধনাথের চোখ দুটি রং করছেন |
১৪শো শতকে মন্দিরটির নির্মাণ হয় বলে মনে করা হয়।১৯৫৯ সালে চিন আগ্রাসনের ফলে
হাজার হাজার তিব্বতি নেপালে আশ্রয় নেয়ে এবং ওই সময় থেকে এই মন্দিরের গুরুত্বও
বৃদ্ধি পায়। আজ সমস্ত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে এই মন্দির খুবই জনপ্রিয়।
ভক্তের প্রার্থনায় উজ্জ্বল বৌধনাথ |
বিশ্বাস, করা হয় বুদ্ধের একটির অস্থির ওপর মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্তূপের নিচে
চারিপাশে ধ্যানরত বুদ্ধের ৮০টি মূর্তি আছে ও স্তূপের ওপরে চারিপাশে বুদ্ধের চার
জোড়া চোখ আঁকা আছে।
বৌধনাথে প্রদীপ দান |
কাঠমান্ডুর এই বিখ্যাত বৌধনাথ মন্দিরটি কে ক্যামেরায়ে বন্দি করা একজন
ফটোগ্রাফারের কাছে পরম তৃপ্তিদায়ক। এক তো মন্দিরের নিজস্ব সৌন্দর্যই মুগ্ধ করে।
তার ওপর দেশ-বিদেশের হাজারো প্রকার দর্শনার্থী ও টুরিস্টের ভিড়!সবমিলিয়ে “সোনায়ে- সোহাগা” বলা যেতে পারে।
রঙিন “প্রেয়ার ফ্ল্যাগগুলি” বৌধনাথের সৌন্দর্যে কে অন্য মাত্রা যোগ করে। মনে করা হয়“প্রেয়ার ফ্ল্যাগ” বৌদ্ধ মন্ত্রগুলি আর প্রার্থনা ভাসিয়ে নিয়ে যায়
স্বর্গে
|
মন্দিরের চারি পাসে কত কি কার্যকলাপ হয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।মন্দিরের সুন্দর
প্রেক্ষাপটে সেই কার্যকলাপ গুলিকে সঠিক ভাবে তুলে ধরাই একজন ফটোগ্রাফারের কাছে
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু নিজের চোখ আর ক্যামেরা তৈরি রাখতে হবে সবসময়ে।
একজন সেবায়েত বৌধনাথ মন্দিরের মাথায় নতুন “প্রেয়ার ফ্ল্যাগ” লাগতে যাচ্ছে |
মাত্র এক- দেড় ঘণ্টা মন্দির
চত্বরে মন ভরে না। কিন্তু কি আর করা ? একদিকে সীমিত সময়ের মধ্যে কাঠমাণ্ডু ভ্রমনের আবার অন্যদিকে পরিবারের বাকি সদস্য তথা আমার ছোট্ট ছেলেটির বায়না, সব মিলিয়ে ক্যামেরা আবার ব্যাগের ভিতর,
আমরা চললাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্যের দিকে। বিদায়ে বৌধনাথ !
মন্দির প্রাঙ্গণে এক প্রার্থনারত তিব্বতি সাধু |
***************
![]() |
ছবি ও লেখাঃ তানিয়া চ্যাটার্জি |
[পরিচিতি: পরিবেশ নিয়ে মাস্টার্স। বেশ কিছু বছর সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে সংসার ও সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। নিজেকে তিনি সখের ফটোগ্রাফার বলেন ও ভ্রমণ হল একমাত্র নেশা]
0 comments: