শিরোনাম

কুমোর


মৃৎ-শিল্পের অন্যতম কারিগর এই কুমোর,আজ আধুনিক প্রযুক্তির সামনে দিশাহারা, অসহায়তার অন্ধকারে দিনে দিনে তলিয়ে যাচ্ছে শিল্পী ও তার শিল্প। 


আমরা জানি মাটির বিভিন্ন ধরনের পাত্র প্রস্তুত করে কুমোর,এটা এমনই এক শিল্প যার দ্বারা আমাদের সমাজ বহু বছর ধরে উপকৃত হয়ে এসেছে। 


একটা সময় ছিল যখন কারিগরি দক্ষতার কারণে কুমোর শীর্ষ স্থানীয় সামাজিক শিল্পীর সম্মান অর্জন করে আমাদের সমাজকে গর্ভিত করেছিল,তাদের নিপুণ দক্ষতার নিদর্শন আমাদের সত্যিই আশ্চর্য করেছিল। 


সুধু মাটির পাত্রই নয়,ঘর সাজানোর জন্য মাটি দিয়ে তৈরি ফুলদানী,ছাঁচের তৈরি বিভিন্ন ধরনের মূর্তি ও নানান সামগ্রী প্রস্তুত করে জীবিকা নির্বাহ করতো তারা।


কিন্তু আজ এই শিল্পকে তছনছ করে বাজারে জায়গা করে নিয়েছে প্লাস্টিক শিল্প। 


চা-এর ভাঁড়ের জায়গায় এসেছে প্লাস্টিকের কাপ,মিষ্টির দোকানে মাঝারি ও বড় ভাঁড়গুলো সরে গিয়ে জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিকের কন্টেইনার। 


মাটির মূর্তি এখন আর কারও বাড়িতে দেখা যায় না,তার বদলে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের শো-পিস। 


যার ফলে উৎপাদন কমেছে এবং ক্রমাগত অন্ধকারে তলিয়ে যেতে চলেছে মৃৎ-শিল্প।


আমাদের দেশে কুমোর সংখ্যায় ক্রমাগত কমে চলেছে অসংরক্ষিত জীবিকা এবং অনিশ্চিত আয়ের কারণে,যারা এখনও টিকে রয়েছে তারাও মনে করেন আর বেশি দিন এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা হয়তো সম্ভব হবে না। 


তাই পরবর্তী প্রজন্মকে ভিন্ন জীবিকার সঙ্গে আবদ্ধ রাখতে চাইছেন বেশিরভাগ কুমোর। যার ফলে ধ্বংসের পথে এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের দেশের এই অন্যতম প্রাচীন শিল্প।

**********************

ছবি ও লেখা- সোমনাথ গাঙ্গুলী
[পরিচিতি-বিবিএ নিয়ে স্নাতক। তারপর পুর দস্তুর ছবি তোলাতে  মননিবেশ। বর্তমানে নেশা ও পেশা দুই জায়গাতেই এক ও একমাত্র ফটোগ্রাফির অবস্থান।]      

0 comments: